
র্যাব-৮ এর অভিযানে মাদারীপুরে মসজিদে ঢুকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেফতার।
নিউজ ডেস্ক।।
র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্রধারী, চোরাচালান, মজুদদার, বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ী ও প্রতারকচক্রসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় এ ধরণের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাব ইতিমধ্যেই বিশেষ সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
র্যাব-৮, সিপিসি-৩, মাদারীপুর এবং র্যাব-৪, সদর কোম্পানী মিরপুর ঢাকা ক্যাম্প এর সম্মিলিত একটি আভিযানিক দল অদ্য ১২ মার্চ ২০২৫ ইং তারিখ সময় ২.৩০ ঘটিকার সময় ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন, চিত্রাশাইল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। কাঠালতলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ হতে বহুল আলোচিত মাদারীপুর জেলার মাদারীপুর সদর থানার চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার এজাহার নামীয় ০১ নম্বর আসামী মোঃ হোসেন সরদার (৬০), পিতা-মৃত আছমত আলী সরদার কে গ্রেফতার করে। এছাড়াও, র্যাব-৮, সিপিসি-৩, মাদারীপুর ক্যাম্পের আরেকটি পৃথক অভিযানে অদ্য ১২ মার্চ ২০২৫ তারিখ ০২০০ ঘটিকার সময় শরীয়তপুরের পালং থানার, আরিগাও এলাকা হতে উক্ত মামলার অন্যতম এজাহার নামীয় আসামী সুমন সরদার(৩৩), পিতা-হাছেন সরদার কে আটক করে।মামলার বিবরণ ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায় যে, মাদারীপুর সদর থানাধীন খোয়াজপুর ইউনিয়নের কীর্তিনাশা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু ব্যবসা ও ইজারা নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত ০৮ মার্চ ২০২৫ ইং তারিখে আনুমানিক ০৯.৩০ ঘটিকার সময় গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ হোসেন সরদার এর নেতৃত্বে, এজাহার নামীয় ৪৯ জন আসামীসহ অজ্ঞাতনামা ৮০/৯০ জন আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে চাপাতি, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, ছেনদা, লাঠি’সহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভিকটিম সাইফুল সরদারের বাড়িতে হামলা করলে, ভিকটিম সাইফুল সরদার ও তার দুই ভাই প্রাণ বাঁচাতে সরদার বাড়ী জামে মসজিদে আশ্রয় নেয়। তখন আসামী মোঃ হোসেন সরদারের নির্দেশে সহযোগী আসামী সুমন সরদার’সহ অন্যান্য আসামীরা মসজিদে ঢুকে ভিকটিমদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে সাইফুল সরদার ও তার ভাই আতাউর সরদার’কে হত্যা করে এবং আরও কয়েকজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়। স্থানীয়রা হতাহতদেরকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম সাইফুল সরদার (৩৩) ও তার আরেক সহোদর আতাউর সরদার(৩৫)’কে মৃত ঘোষণা করে। এছাড়াও, অলিল সরদার, পলাশ সরদার ও তাজেল হাওলাদার’কে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করলে চিকিৎসক পলাশ সরদার(১৮)’কে মৃত ঘোষণা করেন। হামলার সময় আসামীরা ০৪ টি বাড়িতে অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট করে।
উল্লিখিত ঘটনায় মাদারীপুর জেলার মাদারীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়, যার মামলা নং-১৪, তারিখ-০৮ মার্চ ২০২৫।
উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন অনলাইন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া ঘটনাটি প্রচার করে। উক্ত ঘটনাটি র্যাব-৮, বরিশালের নজরে আসলে হত্যাকান্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে এবং ছায়াতদন্ত শুরু করে। হত্যাকান্ডের পর আসামীরা পালিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে। র্যাব-৮, বরিশাল আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামীদের অবস্থান শনাক্ত করে র্যাব-৪ এর সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে মামলার এজাহারভুক্ত ০১ নং আসামী মোঃ হোসেন সরদারকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত এজাহার নামীয় অপর আসামী সুমন সরদার(৩৩)’কে ইতিমধ্যে মাদারীপুর সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং এজাহার নামীয় ০১ নং আসামী মোঃ হোসেন সরদারকে মাদারীপুর সদর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান র্যাব-৮, বরিশাল এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক অমিত হাসান।