
নিউজ ডেস্ক।।
কামরুল হাসান সোহাগ। বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্য বহিষ্কৃত সদস্য সচিব। ফ্যাসিস্ট আমলের ১৭ বছরে ৭৮ টি মামলা নিয়ে জেল খেটেছেন প্রায় ২১৯০ ( বিভিন্ন মেয়াদে) দিন । বছর অনুযায়ী হিসাব করলে প্রায় ৬ বছর। এর মধ্যে ২০১৭ইং সাল থেকে ২০২০ ইং সাল পযন্ত ৩ বছর এক টানা ছিলেন বরিশাল জেলে। সোহাগের ৩১ টি মামলা এখনো চলমান যাহা জামিন অবস্থায় রয়েছে । বিগত ৩৩ টি বছর শুধুমাত্র বিএনপির রাজনীতি করার কারণে তাকে এভাবেই কারাবরণ করতে হয়।
অথচ চলতি বছরের গতমাসে সোহাগের চেহারা সাদৃশ্য কোন এক ব্যক্তির ইয়াবা সেবনের ভিডিওকে পুঁজি করে স্থানীয় গ্রুপিং এর মাধ্যমে ফেসবুক ও সংবাদ মাধ্যমে সোহাগের নামে প্রচার হলে স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ দপ্তর সম্পাদক ওসমান গনি স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে(১০/১০/২০২৫) দলীয়ভাবে সোহাগকে বহিষ্কারের কাগজ প্রকাশিত হয়। সোহাগ যদিও সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করেন তবুও দলীয় শাস্তি থেকে রেহাই পাননি তিনি।
এদিকে প্রচার হওয়া ভিডিও যে তার নয় সেটা প্রমাণ করতে বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত সদস্য সচিব কামরুল হাসান সোহাগ বরিশালের কয়েকজন কম্পিউটার এক্সপার্ট এর শরণাপন্ন হন যাহারা Ai এর দ্বারা ভিডিও তৈরিতে এবং তৈরিকৃত ভিডিওর ব্যক্তি চিহ্নিত করতে সক্ষম। ভিডিও এক্সপার্ট দের ব্যাখ্যা অনুযায়ী প্রচারিত ভিডিওর ব্যক্তি কামরুল হাসান সোহাগ নন। ওটা সোহাগ সাদৃশ্য অন্য কোন ব্যক্তি।
সোহাগ সম্পর্কে জানতে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সুলতান আহমেদ খান কে জানতে চাইলে তিনি জানান, সোহাগ দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত, জেল খাটা এবং মামলায় জর্জরিত বিএনপির সৈনিক। তিনি কোন প্রকার নেশার সাথে জড়িত রয়েছেন বলে আমার জানা নেই। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সোহাগ আমার সহকর্মী তার কোন প্রকার নেশার সাথে সম্পৃক্ততা আমি অন্তত জানতাম বা বুঝতাম। ভাইরাল হওয়া ভিডিও সোহাগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বরিশাল জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নিজামুর রহমান নিজাম জানান, কামরুল হাসান সোহাগ দলের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে স্বতস্পূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতেন। দলীয় কর্মকাণ্ড পালন করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। তবুও দল ছাড়েননি। সোহাগ কখনোই কোনো প্রকার নেশার সাথে জড়িত ছিলেন বলে আমার জানা নেই বলে জানান জেলা আহবায়ক।
এদিকে সেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ দপ্তর সম্পাদক ওসমান গনি বলেন, দলীয় সিনিয়র নেতৃবৃন্দের পরামর্শ ক্রমে আমরা দপ্তরের দায়িত্ব পালন করি। এক কথায় তাদের নির্দেশনা পালন করি সাংগঠনিকভাবে। তবে বাবুগঞ্জের সোহাগের ভিডিও যদি তার না হয়ে অন্য কারো হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবক দল সোহাগের বিষয়টি বিবেচনা করবে। ওসমান গনি আরো বলেন, সংগঠন কখনোই চায় না তার কর্মীদেরকে সংগঠন থেকে দূরে রাখতে। সোহাগ যদি প্রমাণ করতে পারে যে ওই ভিডিও তার নয় এবং সোহাগ যদি আবেদন করে তাহলে তার পদের বিষয়ে অবশ্যই বিবেচনা করা হবে।
এদিকে কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, আমার বুঝতে শেখার পর থেকেই আমি এই দলের রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমি কোন প্রকার নেশার সাথে জড়িত নই। স্থানীয় দু একজন ব্যক্তির সাথে কখনো মতের অনৈক্য হয়েছে তাই বলে সেটা আমার ক্যারিয়ারের জন্য কখনো হুমকি হয়ে দাঁড়াবে এটা আশা করিনি। সোহাগ বলেন আল্লাহর বিচার একদিন হবেই। স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কারাদেশ সম্পর্কে সোহাগ জানান দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে আমরা কেউই নই, দল যেদিন জানতে পারবে বা বুঝবে আমার উপর অন্যায় হয়েছে সেদিন ঠিকই আমার পদ তারা ফিরিয়ে দিবেন বলে বিশ্বাস রাখেন সোহাগ।